গাজীপুর জেলার ভাইরাল জয়না গাছ বা কুসুম গাছ
খলিলুর কদেরীঃ বর্তমানে গাজীপুর জেলার ভাইরাল জয়না গাছ বা কুসুম গাছ। আজ আমরা জানব এই গাছ সম্পর্কে এবং গাছটির অবস্থান ও কিভাবে যেতে হবে। পাশাপাশি জানবো এই গাছের গুনাগুন ও বৈশিষ্ট্য নিয়ে। তার আগে অনুরোধ থাকবে আমার মুহাম্মদ খলিলুর কাদেরী ফেসবুক পেজটি ফলো এবং ইউটিভ চ্যানেলটি সাবস্কাইব করবার।
এই জয়না গাছ বর্তমানে বিরল প্রজাতির এক উদ্ভিদ। কয়েক যুগ আগেও ভারতীয় উপমহাদেশ ও পূর্ব এশিয়ার গ্রামে গঞ্জে বনেবাদাড়ে গরম কালে প্রচুর পাওয়া যেত। এই গাছের বীজ দিয়ে তৈরি করা হয় কুসুম তৈল। ঔষধি গুণাগুণেও রয়েছে এর বেশ অবদান। এটি ক্ষিদে বাড়ায়, কফ নাশ করে, হজমশক্তি বৃদ্ধি করে। শুধু এর ফল নয়, পুরো জয়না গাছের প্রতিটি অংশই কোনও না কোনও ঔষধি গুণসম্পন্ন। কুসুম গাছের ছাল থেকে বাতের ওষুধ গ্রামে গঞ্জে কবিরাজরা এখনও তৈরি করেন। কুসুম বীজকে প্রথমে গরম জলে ফুটিয়ে, তারপর শুকনো করে নিষ্পেসিত তেল বহু কাজে লাগে।
এই গাছের আরো একটি বৈশিষ্ট্য হলো একেক ঋতুতে এই গাছের রঙ্গ একেক রকমের হয়ে থাকে। যেমন এখন দেখা যাচ্ছে গাছটিতে লাল পাতা বের হয়েছে এবং কিছুদিন পূর্বে আরো গাঢ় রঙয়ের পাতা ছিল যা অল্প কয়েকদিন পরেই সবুজ রঙের আকার ধারণ করবে।
বর্তমান সময়ে গাজীপুর জেলায় বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম বিশেষ করে ফেসবুকে ব্যাপক ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। প্রচুর মানুষ এখানে বেড়াতে আসেন এবং এই গাছ নিয়ে জনমানুষের রয়েছে ব্যাপক কৌতূহল। এই গাছের পাশেই রয়েছে একটি ছোট নদী। যে নদীর নাম সালদহ নদী নদীটির দৈর্ঘ্য ৩৭ কিলোমিটার। এটি এমন একটি যায়গায় যেখানে তিন দিকে সবুজ ধান ক্ষেত এক দিকে নদী ও মাঝখানে এই গাছ। চৈত্রের বাতাস বসন্তের হাওয়ায় দোলা দেয় এই জয়না গাছের লাল পাতা তাই এই সময়েই বেশ জনপ্রিয় হয় যায়গাটি। এদিকে আবার ১ কিলোমিটার দক্ষিণে রয়েছে বিখ্যাত কথা সাহিত্যিক হূমায়ুন আহমেদের নূহাস পল্লী। যার কারণে প্রতি বছরই বসন্তের শেষে ভ্রমণ পিপাসু মানুষ ও প্রকৃতি প্রেমিরা দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ছুটে আসে এই পিরুজালী গ্রামে।
এখন জানব এই গাছটির অবস্থান সম্পর্কে। গাজীপুর জেলার সদর উপজেলা পিরুজালী ইউনিয়নের মাস্টারপাড়া গ্রামে এই কুসুম গাছ বা জৈনা গাছের অবস্থান। কেউ যদি গাজীপুর চৌরাস্তা হয়ে যেতে চান তাহলে হুতাপাড়া অথবা ভবানীপুর নেমে সরাসরি পিরুজালী গ্রাম এবং গ্রামের পশ্চিম দিকে জয়না গাছ। আবার কেউ যদি মাওনা থেকে যেতে চান তাহলে বারতোপা বাজার হয়ে সরাসরি পিরুজালী গ্রাম। নিজস্ব গাড়ি না থাকলে হুতাপাড়া অথবা ভবানীপুর হয়ে যাওয়াই ভালো।