প্রধান উপদেশটার বিশেষ সহকারী কে এই মাহফুজ আব্দুল্লাহ
প্রধান উপদেশটা ড. মোহাম্মদ ইউনুসের প্রধান সহকারী হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সদস্য মুহাম্মদ মাহফুজ আলম ওরফে মাহফুজ আব্দুল্লাহ। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের লিয়াজোঁ কমিটির একজন সমন্বয়ক। গণমাধ্যমে তার এই নিয়োগের খবর আসার পর ব্যপক আলোচনায় আসেন তিনি।
গত বুধবার (২৮ আগস্ট ২০২৪) তারিখ রাতে মাহফুজ আলমকে নিয়োগ দেয়ার পর থেকেই সবাই মাহফুজের সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হয়েছেন।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী কে এই মাহফুজ আলম?
কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময়ে ফ্রন্ট লাইনে তাকে তেমন একটা দেখা যায়নি। তবে কোনও কোনও গণমাধ্যমে তিনি আলোচনায় এসেছে ‘অজ্ঞাত ইন্টেলেকচ্যুয়াল তুরণ’ হিসেবে। বলা হয়ে থাকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মাস্টারমাইন্ড বা তাত্ত্বিক গুরু হিসেবে কাজ করেছেন তিনি। ডিজিএফআই ও এনএসআই’র মতো রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাও তার পরিচয় উদ্ধার করতে পারেনি। সাবেক সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা তন্ন তন্ন করে খুঁজলেও তাঁর নাম বদল ও রূপ বদলের পারদর্শিতার কাছে বারবার পরাজিত হয় সংস্থাগুলো।
বার বার হরতাল, অসহযোগ আন্দোলন, ও সরকার পতন শব্দগুলোর উপর যখন মানুষের বিশ্বাস উঠে গিয়েছিল তখন নতুন শব্দ, নতুন ধারণা নিয়ে উপস্থিন হন তিনি। জানা যায় 'বাংলা ব্লকেড, কমপ্লিট শাটডাউন, মার্চ ফর ঢাকা' এই ধারণাগুলো ধারণা এসেছি তার পক্ষ থেকেই। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনে মাহফুজেরও বড় ভূমিকা ছিল। সেনাপ্রধান ও রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আলোচনা করা ছাত্র আলোচনা দলে ছিলেন তিনি।
নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টামণ্ডলী গঠিত হয় সেখানে দুইজন সমন্বয়কও উপদেষ্টা হয় কিন্তু মাহফুজ আলম ফ্রন্টলাইনে আসতে চায়নি, সে অন্তরালেই থাকতে চেয়েছিল।
তবে এই বিপ্লব নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ডঃ মোহাম্মদ ইউনূসের আগ্রহ ও অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে মাহফুজ আলমের নাম। ডঃ ইউনুস এই নতুন সম্ভাবনাকে তাঁর সহকারী হিসাবে নিয়োগ দেন।
মাদরাস ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে উঠে আসা প্রধান উপদেষ্টার এই বিশেষ সহকারী মাহফুজ আব্দুল্লাহর বাড়ি লক্ষীপুর জেলার রামগঞ্জ উপজেলার ইসাপুর গ্রামে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০১৫–১৬ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র। তিনি বাংলাদেশের খ্যাতনামা তামিরুল মিল্লাত কামিল মাদরাসা হতে থেকে ২০১৫ সালে এইচএসসি সমমান (আলিম) পাস করে ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। লেখালেখির অভ্যাসও রয়েছে মাহফুজের। 'ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা ও সমকালীন' জনমত নামের দুই খণ্ডের বইও প্রকাশ করেছেন তিনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের ছাত্র থাকা অবস্থায় তিনি সংক্ষিপ্ত সাংবাদিকতার কাজ করেছিলেন। ২০১৮ সালের ছাত্র আন্দোলনে আখতার হোসেন বা আকরাম হোসেনসহ তার বন্ধুরা ব্যাপকভাবে জড়িত ছিল। মাহফুজ ঘনিষ্ঠ ছিলেন কিন্তু কোনো দলেরই ছিলেন না।