জাতীয় সংগীত পরিবর্তন ও মুক্তিযুদ্ধের সংখ্যা আর আযমী ও জামায়াতে ইসলামী

সাম্প্রতিক ঘটনা প্রসঙ্গে: আবদুল্লাহিল আমান আযমী ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। (জাতীয় সংগীত পরিবর্তন ও মুক্তিযুদ্ধের সংখ্যা)



আবদুল্লাহিল আমান আযমী দীর্ঘ ৮ বছর ফ্যাসিস্ট শক্তির আয়নাঘরে বন্দি থেকে বের হয়ে দুদিন আগে একটি প্রেস ব্রিফিং করেন। প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত (প্রায় দেড় ঘন্টা) লাইভটি দেখেছি। উক্ত লাইভে তিনি অনেক কথা বলেছেন, অনেক স্মৃতিচারণ করেছেন, অনেক নির্যাতনের বর্ণনা সহ কিছু গুরুত্বপূর্ণ দাবী জানিয়েছেন যার। মধ্য থেকে দুটো দাবী বর্তমানে ব্যাপক আলোচনায় আসছে। কিন্তু যা আলোচনা দরকার ছিল তা না হয়ে হচ্ছে অন্যটা!

মুক্তিযুদ্ধের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তদন্ত সাপেক্ষে সংখ্যাটি নির্ধারিত হোক, কারো মুখের কথায় এটা নির্ধারণ হতে পারে না। যদি এটা ৩০ লাক্ষ হয় সমস্যা নেই কিন্তু সেটা তদন্ত করে হোক। তিনি যোগ করেন, যার মুখের কথায় এটা নির্ধারণ করা হয়েছে তিনি ৩ লক্ষ বলতে গিয়ে ৩ মিনিয়ন বলে ফেলেছেন। (একটি ইংরেজি পত্রিকার সোর্স দিয়েছেন)।

জাতীয় সংগীত পরিবর্তন প্রসঙ্গে তিনি একটি দাবি জানিয়েছেন, এর ব্যাখ্যা দিয়েছেন, কি কারণে এটা পরিবর্তন করা উচিৎ। সে সম্পূর্ণ ব্যাখা না শুনেই অনেকে উনার বিরুদ্ধে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছে। আগে তার ব্যাখ্যা শুনা উচিৎ সবার... আমি নিজেও চাই না জাতীয় সংগীত এখন এসে পরিবর্তন হোক কিন্তু উনার ব্যাখ্যা যৌক্তিক মনে হয়েছে। এই সংগীত আমাদের স্মৃতিতে মিশে গিয়েছে তাই এটা পরিবর্তন করা প্রায় অসম্ভবই।

আবদুল্লাহিল আমান আযমী এর পিতা জামায়াতের একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা ছিলেন যার কারণে উনার কথাগুলো দায় সরসরি জামায়াতে ইসলামী এবং এই সংগঠন এর উপর এসেছে, অনেকে দায় চাপিয়ে দিচ্ছে! অথচ জামায়েত কিংবা শিবির কাউকেই উনার সাথে এসব দাবীতে একমত পোষণ করে বক্তব্য দিতে দেখিনি। জামায়াতে ইসলামী এমন সংগঠন না যেখানে বাবা আমির থাকলে ছেলেকেও আমির বানিয়ে দিবে৷ যদি তাই হতো তবে আমিও আজ জামায়াতের উত্তরাধিকার হতে পারতাম, মামা মহানগরীর আমির ছিল অথচ আমি এই সংগঠন এর কর্মী হওয়ারও যোগ্য মনে করি না নিজেকে।

সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয় হলো, আযমীর এ সবগুলো দাবিই ছিল সেনা প্রধান কে লক্ষ্য করে বলা। (জামায়াত কে লক্ষ্য করে বা জামায়াতের পক্ষ থেকে নয়)... উক্ত লাইভে এসে তিনি জামায়াতের নামটি পর্যন্ত উচ্চারণ করেননি, তাহলে উনার কথার সাথে তাল মিলিয়ে জামায়াতে ইসলামীর সংগঠন কে কেন মানুষ প্রশ্নবিদ্ধ করছে। আযমী তো জামায়াতের কোন পদেও নেই তাছাড়া সেনা প্রধান উনাকে এসব বিষয়ে উনাকে আস্থা দিয়েছে বলে উনি বড় বড় করে দাবীগুলো জানিয়েছে। এখানে সংগঠন কে টানার আগে সেনা প্রধানকে প্রশ্ন করতে পারেন!

শুধু উনার এই দুটো কথাই ভাইরাল হলো? ভারত বিদ্বেষী কথা গুলো দেখলেন না? যারা বিতর্ক তৈরি করছেন তারা কি সম্পূর্ণ বক্তব্য শুনেছেন? তিনি বলছিলেন, আমার যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও আমাকে পদোন্নতি দেয়ার বদলে, আমাকে চাকরি থেকে অব্যহতি দিয়েছে। এর আগে তিনি সেনাপ্রধান এর কাছে এটাও দাবী জানান যে, তাকে পুনরায় চাকরিতে পুন:বহাল দেখিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে যেন উনাকে বিদায় জানানো হয়। সেনাপ্রধান উনার এই দাবি পূর্ণ করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন বলে জানিয়েছেন।

উনি তো জামাতের কেউ নয়, উনি হচ্ছেন সেনা সদস্য। সুতরাং একজন সেনাসদস্য কে জামায়াতের নেতা হিসেবে না দেখে সেনাসদস্য হিসেবে দেখুন। আর উনি সাধারণ কোন সেনাসদস্য নয়... পদমর্যাদা, উচ্চক্রম অনুসারে জেনারেল এর পরে উনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর চার নম্বর সারির অফিসার ছিলেন... আর তিনটি ধাপ অতিক্রম করলে উনি সেনাপ্রধান হতেন। অনেক সাধারণ সেনারা জানিয়েছেন, বাহিনীতে উনার এতোই মূল্যায়ন ছিল যে, সকলেই উনাকে ভবিষ্যৎ সেনাপ্রধান হিসেবে ধরেই নিয়েছিলেন। আবারো বলি, উনার সম্পর্কে ট্রোল করার আগে বিষয়টি মনে রাখুন, জামাত নেতার পুত্র হওয়ার কারণে কিন্তু উনি আয়নাঘরে যায়নি, ভারত বিদ্দ্বেষী হওয়ার কারণে জীবনের গুরুত্বপূর্ণ ৮ টি বছর হারিয়েছেন! (মোঃ খলিলুর রহমান)

Next Post Previous Post
1 Comments
  • নামহীন
    নামহীন ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ এ ১০:০৯ PM

    ওনি সেনা সদস্য হিসেবে কিভাবে বলবেন!!?কারণ ওনি সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার সময়ই তো এই সংগীত না গাইলেও শুনেছেন বহু বহুবার।
    আপনি যে বললেন সেনাবাহিনীর সবাই জানতো বা ভাবতো ওনি সেনাপ্রধান হবেন!! তখন কি আপনি সেনাবাহিনীতে ছিলেন??ওনি জামাতের কেউ না তো ফেইসবুক সয়লাব হলো কিভাবে!!??শেখ হাসিনা বেশী বুইঝা পালাইছে,আপনারা বেশী বুইঝা কি করবেন??তার লেজুড়বৃত্তি করবেন!!??জয় বঙ্গবন্ধু --

Add Comment
comment url